ইউএনওর বাচ্চাদের পড়াতে খুব ভালো লাগে তাই হাতে সময় পেলেই তিনি ছুটে যান কাছের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। প্রতিষ্ঠান প্রধানের অনুমতি নিয়ে ঢুকে পড়েন কোনো ক্লাসে। শুরু করেন পাঠদান। একজন পেশাদার শিক্ষকের মতোই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশে গিয়ে মজার সব গল্পের মাধ্যমে শিক্ষাদানে বেশ পটু তিনি।
শুধু পড়ানোর ক্ষেত্রে নয়, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতিতেও নিরলস কাজ করে যাওয়া ওই ব্যক্তি হলেন কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তাপস শীল।
৩৪তম বিসিএসের এই কর্মকর্তা শাহাজালাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিসাববিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। সরকারি প্রশাসনিক কর্মকর্তা হয়েও শিক্ষকতা করার সুপ্ত বাসনা এখনো হৃদয়ে ধারণ করেন তিনি। আর এজন্য সরকারি দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সুযোগ পেলেই চলে যান কোনো স্কুলে।
রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দেখা যায় উপজেলার মধ্যমতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অংকের ক্লাস নিচ্ছেন তিনি। এ সময় স্কুলের প্রধান শিক্ষক জাহানারা বেগম ও শ্রেণি শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী রবিউল ও উম্মে মাহিমা বলে- ইউএনও স্যার আমাদের গণিত ক্লাস নিয়েছেন। ক্লাসে এসে স্যার আমাদের বিভিন্ন প্রশ্ন করেছেন এবং মজার গল্প বলেছেন। সেই সঙ্গে কিভাবে পড়া মনে রাখা যায়, সেই নিয়মও শিখিয়ে দিয়েছেন।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহানারা বেগম বলেন, ইউএনও স্যার সময় পেলেই মাঝেমধ্যে হঠাৎ করে স্কুলে আসেন। বিভিন্ন ক্লাসে গিয়ে পাঠদান করান। স্কুল আঙিনা ঘুরে দেখেন। একইসঙ্গে শিক্ষা বিষয়ক পরামর্শ দেন। মনে হয়েছে যেন শিক্ষা ব্যবস্থায় আমরাও নতুন কিছু শিখেছি।
পাঠদানের বিষয়ে ইউএনও তাপস শীল বলেন, বাচ্চাদের পড়াতে খুব ভালো লাগে। শিক্ষাজ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়ার মতো আনন্দ আর কিছুতে নেই। ছোট ছোট বাচ্চাদের পড়ানো অসাধারণ ব্যাপার। এতে দুটি লাভ হয়। এক, বাচ্চাদের পড়াতে পারছি আবার ওই স্কুলে কোনো সমস্যা আছে কিনা, সেটাও সরেজমিন দেখতে পারছি।
ইউএনও আরও বলেন, উন্নত ও সমৃদ্ধ জাতি গঠনে শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী এবং দেশের একজন নাগরিক হিসেবে শিক্ষা খাতের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারা আমার জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়।
সূত্রঃ যুগান্তর