সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক (প্রাক্–প্রাথমিক) পদে গত জানুয়ারিতে যোগ দেওয়া ২৪ হাজার ২৫২ জন শিক্ষকের বেতনের অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে। আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগেই শিক্ষকেরা বকেয়া সব মাসের বেতন একসঙ্গে পাবেন বলে জানিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পিইডিপি-৪) দিলীপ কুমার বণিক প্রথম আলোকে বলেন, প্রাক্–প্রাথমিকের ২৪ হাজার ২৫২ জন শিক্ষকের বেতন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আশা করি এ সপ্তাহে তাঁরা বেতন পাবেন। যে মাসে যোগদান করেছেন সে মাস থেকে এখন পর্যন্ত সব মাসের বেতন একসঙ্গে দেওয়া হবে।
শিক্ষকেরা বেতনের সঙ্গে ঈদুল ফিতরের বোনাসও পাবেন বলে জানান দিলীপ কুমার বণিক। তিনি বলেন, শিক্ষকদের বেতন দ্রুত দিতে ইলেকট্রনিক ফান্ডস ট্রান্সফারসহ (ইএফটি) সব প্রক্রিয়া শেষ করা হচ্ছে।
তিন ধাপে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষে গত ১৪ ডিসেম্বর সহকারী শিক্ষক পদে ৩৭ হাজার ৫৭৪ জনকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়। কিন্তু নিয়োগের জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়েও প্রাথমিকের চাকরিতে যোগ দেননি ২ হাজার ৫৫৭ জন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ জানুয়ারি দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ৩৫ হাজার ১৭ জন সহকারী শিক্ষক পদে যোগ দেন। এর মধ্যে মেধা তালিকায় ওপরের দিকে থাকা ১০ হাজার ৭৬৫ জনকে রাজস্ব খাতে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নেওয়া হয়। বাকি ২৪ হাজার ২৫২ জনকে প্রাক্–প্রাথমিকে নেওয়া হয়। রাজস্ব খাতের প্রায় সব সহকারী শিক্ষক চলতি মাসে বেতন পেয়েছেন। কিন্তু প্রাক্–প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকেরা যোগ দেওয়ার আড়াই মাসেও বেতন পাননি।
একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (প্রাক্–প্রাথমিক) হিসেবে কর্মরত মো. নাইমুর রহমান বলেন, ‘জীবনের প্রথম চাকরি। আশা ছিল বেতন পেয়ে পরিবারের জন্য উপহার কিনব। কিন্তু আড়াই মাসেও বেতনের খবর নেই। অধিদপ্তর থেকে বারবার আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বেতন পাচ্ছি না। সামনে ঈদ। বেতন না পাওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি।’
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাজস্ব খাতে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রাইসুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা যাঁরা রাজস্ব খাতে নিয়োগ পেয়েছি, তাঁরা মার্চ মাসের বেতন, ঈদ বোনাস ও বৈশাখী ভাতা পেয়েছি। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন দুই–এক দিনের মধ্যে পাব বলে শিক্ষা অফিস জানিয়েছে। প্রাক্–প্রাথমিক ও রাজস্ব খাতের আমরা একই দিনে যোগদান করেছি। আমরা বেতন পেলেও প্রাক্–প্রাথমিকের শিক্ষকদের বেতন না পাওয়ার বিষয়টি অস্বস্তিকর।
সূত্রঃ প্রথম আলো