প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে আগে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য বৈষম্যমূলক আলাদা আলাদা শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হতো। সহকারী শিক্ষক নিয়োগে পুরুষদের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারিত ছিল স্নাতক এবং মহিলাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হত এইচএসসি। বর্তমানে পুরুষ ও মহিলা উভয়ের জন্যই শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক নির্ধারণ করা হয়েছে।
পূর্বে এইচএসসি পাশ শিক্ষাগত যোগ্যতায় নিয়োগপ্রাপ্ত মহিলা শিক্ষকদের পাশাপাশি স্নাতক পুরুষ শিক্ষকদেরকেও বাধ্যতামূলকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইইআর) থেকে দেড় বছর মেয়াদী ‘ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন’ নামে একটি অত্যাধুনিক ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করতে হতো।
বর্তমানে নারী-পুরুষ উভয়ের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক হলেও আগের মতো বর্তমানেও বাধ্যতামূলকভাবে ফাউন্ডেশন প্রশিক্ষণ হিসেবে একই ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন নামের ডিপ্লোমা কোর্সটি সম্পন্ন করতে হয়।
অপরদিকে, এসএসসি/এইচএসসি পাসের পর কারিগরি বোর্ডের অধীনে যে কোনো কলেজ থেকে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করে যেখানে অন্য ডিপ্লোমাধারীরা ২য় শ্রেণির পদমর্যাদায় (১০ম গ্রেডে) কর্মরত, সেখানে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা স্নাতক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআর থেকে ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন কোর্স সম্পন্ন করে ডিপ্লোমাধারী হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে তাদেরকে ৩য় শ্রেণির মর্যাদায় ১৩ তম গ্রেডে বেতন দেয়া হবে? এটা কি ডিপ্লোমাধারী সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে বৈষম্য নয়?বর্তমান অন্য ডিপ্লোমাধারী পেশাজীবীদের সাথে প্রেক্ষাপট তুলনা করলে ডিপ্লোমাধারী প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড শুধু দাবী নয় বরং অধিকার হয়ে দাড়ায়।
মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার আসল কারিগর প্রাথমিকের এই সহকারী শিক্ষকদের এত নিম্নগ্রেডে ও বৈষম্যের মধ্যে রেখে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা যাবে কি? বৈষম্য বিদ্যমান থাকলে অনিচ্ছা সত্ত্বেও শিক্ষকদের পাঠদানে আন্তরিকতার ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তাই কর্তৃপক্ষের কাছে বিনীত নিবেদন- ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন কোর্স সম্পন্নকারী সব প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের অন্য ডিপ্লোমাধারীদের মতো ২য় শ্রেণির মর্যাদা তথা ১০ম গ্রেড প্রদান করা হোক।
লেখক-মাহফিজুর রহমান,শিক্ষক ও কলামিস্ট