ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানে ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

নিরাপদ সড়ক প্রতিষ্ঠায় ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানে ঘুষ-দুর্নীতির পাশাপাশি চালকদের মাদকশক্তি প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনা।

একইসাথে তিনি দুর্ঘটনা ঘটার সময় সকলকে আইন নিজের হাতে  তুলে নেয়ার মানসকিতা পরিহার ও  ট্রাফিক আইন মেনে চলার আহ্বান জানান।

আজকে ২২ অক্টোবর রোজ বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস ২০২০ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একথা বলেছেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভালোভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরে যেন ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করা হয় । টাকা দিয়ে কেউ যেন ড্রাইভিং লাইসেন্স না পান সে বিষয়টির প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে।

যারা গাড়ি চালাচ্ছেন তারা মাদক সেবন করছেন কি না, এ বিষয়টি খেয়াল রাখার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন ।তিনি বলেন সকল ড্রাইভারের জন্য ডোপ টেস্ট বা মাদক সেবনের বিষয়ে পরীক্ষা করা একান্তভাবে অপরিহার্য।

তাছাড়া, দুর্ঘটনা ঘটার সাথে সাথে চালককে দোষ দিয়ে তাকে প্রহার করা বা প্রহার করতে  করতে মেরে ফেলার মতো আইন হাতে তুলে নেয়ার সংস্কৃতিটি সকলকে ত্যাগ করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী  ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে বলেন, দেশে ট্রাফিক  আইন মেনে চলার বিষয়ে নাগরিক সচেতনতা আমাদের খুব বেশি প্রয়োজন। আমাদের পথচারিদের নাগরিক সচেতনতার খুব অভাব রয়েছে। আমরা মুখে খুব বলে টলে যাই কিন্তু কাজের বেলায় দেখি পাশেই ফুটওভার ব্রীজ অথচ রাস্তার মধ্যখান দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন।

একটা গাড়ি আসছে অথচ হাত দেখিয়েই অমনি হাঁটা দিল কিংবা বাবা দেখা যাচ্ছে, বাচ্চা কোলে নিয়ে ফুটওভার ব্রীজ ব্যবহার না করে রাস্তার বেড়া দেওয়া ডিভাইডার অবৈধভাবে অতিক্রম করছেন।

তিনি বলেন, গাড়িটা একটা যন্ত্র  তাই এটি ব্রেক করলেও থামতে একটু সময় লেগে যায়। হাত দেখালেই গাড়ী কখনো থেমে যেতে পারে না। এই বিষয়েও মানুষ, চালকসহ সকলকে সচেতন করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ প্রদান করেন।

তিনি উদহারণ দেন-ব্যক্তির নিজের ভূলে সে দুর্ঘটনা শিকার হলেও অনেক সময় অহেতুক চালককে, সরকারকে বা সড়ককে দোষ দেয়া হয় এবং তা নিয়ে আন্দোলন হয় এবং সরকারের পদত্যাগও দাবি করা হয়, যদিও প্রকৃত দোষটা কার সেটা বিবেচনা করা হয় না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যত্র তত্র যেখানে সেখানে রাস্তা পারাপার বন্ধ করতে হবে এবং ট্রাফিক নিয়ম সবাইকে মেনে চলতে হবে। ট্রাফিক আইন মেনে চলা এটা সকলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ছোট বাচ্চাদের থেকে শুরু করে স্কুল পর্যায়ের প্রত্যেক জায়গাতেই এই ট্রাফিক আইন সম্পর্কে শিক্ষা দেয়া দরকার। তিনি স্কুল পর্যায়ে এবং অফিস আদালতে সকলের জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য পোষ্টারিং করে জনসচেতনতা সৃষ্টির ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।

অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সভাপতিত্বে সড়ক এবং জনপদ বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মো. একাব্বর হোসেন এবং বেনজীর আহমেদ, এমপি, সংযুক্ত ছিলেন।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে রাজধানীর বনানীস্থ বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) ভবন মিলনায়তনে মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

চতুর্থবারের মতো এবছরও দেশে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উদযাপিত হচ্ছে । এবারের জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসের প্রতি পাদ্য হচ্ছে- মুজিববর্ষের শপথ, সড়ক করবো নিরাপদ।

Check Also

শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা

বিসিএসের প্রিলি–লিখিতসহ গুরুত্বপূর্ণ ৩০টি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে

‘বিসিএস প্রিলি–লিখিতসহ গুরুত্বপূর্ণ ৩০ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস’ শিরোনামে দেশের অন্যতম বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টি ফোর …

বই খুলে দিচ্ছেন এইচএসসি পরীক্ষা,দুই কেন্দ্র সচিবসহ ৫ জন প্রত্যাহার

বই খুলে এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার অভিযোগে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার পালাখাল রোস্তম আলী ডিগ্রি কলেজের দায়িত্বরত …

আপনার মতামত জানান