ইন্টারনেট গতি র‌্যাংকিং,লিবিয়া-সোমালিয়া-উগান্ডার চেয়েও পিছিয়ে বাংলাদেশ

বাংলাদেশের মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গড় গতির র‌্যাংকিংয়ে অবস্থান একেবারে নিম্নস্তরে।এমনকি বাংলাদেশ মোবাইল ইন্টারনেট গতিতে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ লিবিয়া, সিরিয়া, সোমালিয়া, ইথিওপিয়া ও উগান্ডার চেয়েও পিছিয়ে রয়েছে।

ইন্টারনেট অ্যাকসেস ও পারফরম্যান্স অ্যানালাইসিস কোম্পানি ওকলার সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে জানা গেছে, চলতি বছরের মে মাসের তুলনায় জুনে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে দেশের অবস্থান ২ধাপ পিছিয়েছে এবং মোবাইল ইন্টারনেট গতিতে বাংলাদেশ আরও ১ পিছিয়ে প্রায় তলানিতে নেমেছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক ইন্টেলিজেন্স, টেস্টিং অ্যাপ্লিকেশন্স এবং প্রযুক্তি নিয়ে ওকলা কাজ করে থাকেন।

ওকলার প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার সবগুলো দেশই বাংলাদেশের চেয়ে মোবাইল ইন্টারনেট গতিতে এগিয়ে। ব্রডব্যান্ডে তুলনামূলক একটু ভালো অবস্থা থাকলেও মোবাইল ইন্টারনেটের গতিতে বাংলাদেশের অবস্থান খুবই বাজে।যদিও আগের মাসের তুলনায় জুনে ব্রডব্যান্ড গতির দিক দিয়ে বাংলাদেশ ২ধাপ পিছিয়েছেন।

স্পিডটেস্ট ডটনেটে ১৩৭টি দেশের মোবাইল ইন্টারনেট গতির মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৫তম। বাংলাদেশের মোবাইল ইন্টারনেটে ডাউনলোড স্পিড ১২ দশমিক ৪৮ মেগাবিট পার সেকেন্ড (এমবিপিএস)। আর আপলোড স্পিড ৭ দশমিক ৯৮ এমবিপিএস।

বাংলাদেশের পরের অবস্থানে রয়েছে ভেনিজুয়েলা ও আফগানিস্তান। সর্বশেষ অবস্থানে থাকা আফগানিস্তানের ডাউনলোড স্পিড ৭ দশমিক ৩৭ এমবিপিএস। চলতি জুন মাসে বৈশ্বিক গড় ডাউনলোড গতি হচ্ছে ৫৫ দশমিক ৩৪ এমবিপিএস। আর আপলোড স্পিড হচ্ছে ১২ দশমিক ৬৯ এমবিপিএস।

২০১৮ সালের জুনে মোবাইল ইন্টারনেটের গতির হিসাবে ১২৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১২তম। সে সময় বাংলাদেশের মোবাইল ইন্টারনেটের গড় গতি ছিল ৮.৯৭ এমবিপিএস। এ ছাড়া আপলোড স্পিড ৫.৪৬ এমবিপিএস। তিন বছরের ব্যবধানে দেশে মোবাইল ইন্টারনেটের গতি কিছুটা বাড়লেও বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় তা অনেক কম।

বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির কর্মকর্তারা জানান, দেশে মোবাইল অপারেটরদের সেবার মান খারাপ হওয়ার উল্লেখযোগ্য একটি বড় কারণ হচ্ছে পর্যাপ্ত তরঙ্গ না থাকা। দেশে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যার তুলনায় তরঙ্গ খুবই নগণ্য। এতে ইন্টারনেট গ্রাহকরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির মধ্যে রয়েছেন ।

সেবার মান বাড়াতেই গত ৮ মার্চ অব্যবহৃত তরঙ্গের নিলাম হয়। নিলামে মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন, বাংলালিংক ও রবির তরঙ্গ আগের তুলনায় বাড়লেও ইন্টারনেটের গতিতে এখনো তেমন উন্নতি হয়নি। যদিও এসব অপারেটরের অধিকাংশ টাওয়ার ফোরজির আওতায় আনা হয়েছে।

অনলাইনে ইন্টারনেটের গতি জরিপকারী প্রতিষ্ঠান স্পিডটেস্টের চলতি বছরের জুনে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ লিবিয়া, সিরিয়া, উগান্ডা ও সোমালিয়ার মোবাইল ইন্টারনেট ডাউনলোড স্পিড হচ্ছে ১৬.৬ থেকে ২২.২ এমবিপিএস পর্যন্ত। মোবাইল ইন্টারনেট গতিতে জুন মাসে ছয় ধাপ এগিয়ে পাশের দেশ ভারতের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ১০৯তম আর তাদের মোবাইল ইন্টারনেটের ডাউনলোড গতি ১৭ দশমিক ৮৪ এমবিপিএস। মোবাইল ইন্টারনেট গতিতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কা ১২৯, পাকিস্তান ১১৪ ও নেপাল ১০৫তম অবস্থানে রয়েছে।

মোবাইল ইন্টারনেট গতিতে শীর্ষস্থানে রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, যাদের ডাউনলোড ও আপলোড গতি যথাক্রমে ১৯৩ দশমিক ৫১ এমবিপিএস ও ২৮ দশমিক শূন্য ৫ এমবিপিএস। এর পরের অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, কাতার, নরওয়ে, সাইপ্রাস ও চীন।

এদিকে মোবাইল ইন্টারনেটের তুলনায় ব্রডব্যান্ডে বাংলাদেশের অবস্থান তুলনামূলক ভালো। চলতি বছরের মে মাসের তুলনায় জুনে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতি সামান্য বাড়লেও বৈশ্বিক র‌্যাংকিংয়ে ২ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ।

স্পিডটেস্টের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের জুন মাস শেষে ১৮১টি দেশের মধ্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতিতে বাংলাদেশের অবস্থান ৯৮তম, যা মে মাসে ছিল ৯৬তম। জুনে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে ডাউনলোড স্পিড দাঁড়িয়েছে ৩৮ দশমিক ২৭ এমবিপিএস, যা আগের মাসে ছিল ৩৮ দশমিক ১৩ এমবিপিএস। জুনে আপলোড গতিও কিছুটা বেড়ে ৩৭ দশমিক ২২ এমবিপিএসে উঠেছে।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র ভারত ব্রডব্যান্ডে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। বৈশ্বিক ব্যাংকিয়ে ভারতের অবস্থান হচ্ছে ৭০তম। শীর্ষে রয়েছে মোনাকো, যে দেশটির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে ডাউনলোড গতি হচ্ছে ২৬০ দশমিক ৭৪ এমবিপিএস। এর পরের অবস্থানে রয়েছে সিঙ্গাপুর।

সূত্র-বাংলাদেশ প্রতিদিন

Check Also

অনলাইন

যা জিজ্ঞেস করবেন সাথে সাথে উত্তর পাবেন,যেভাবে ব্যবহার করবেন চ্যাটজিপিটি

চ্যাট জেনারেটিভ প্রি-টেইন্ড ট্রান্সফর্মার বা চ্যাটজিপিটি ইতোমধ্যেই সাড়া ফেলেছে বিশ্বব্যাপী। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত চ্যাটবটটিতে কিছু জানতে …

গুগলে ৩৯ বার চাকরি চেষ্টা করেও ব্যর্থ, অবশেষে ৪০তম বারে চাকরি পেলেন

গুগলে ৩৯ বার চাকরির চেষ্টা করেও ব্যর্থ, অবশেষে ৪০তম বারে চাকরি পেলেন

গুগলে ৩৯ বার চেষ্টা করেও চাকরি পাননি বরং প্রতিবারই ব্যর্থ হয়েছেন। তাতেও তিনিহাল ছাড়েননি বরং …

আপনার মতামত জানান