জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক শিক্ষকদের টাইমস্কেল সংক্রান্ত রিটের রায় রবিবারে

জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের টাইম স্কেলের সুবিধা ফেরত চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দেয়া পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করা রিটের শুনানি আজকে শেষ হয়েছে।হাইকোর্ট আগামী রোববার এ বিষয়ে রায় প্রদান করবেন ।

আজকে ২৫ ফেব্রুয়ারি রোজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ সংক্রান্ত রুলের চূড়ান্ত শুনানির পর রায় ঘোষণার দিন ঠিক করে দেন।

আইনজীবী মোকছেদুল ইসলাম  রিটের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন এবং রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় শুনানি করেন ।

আইনজীবী মোকছেদুল ইসলাম বলেন, আইন অনুযায়ী নিয়ম মেনেই  শিক্ষকদের টাইম স্কেলের সুবিধা দেয়া হয়েছে । প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এখনও মনে করেন যে শিক্ষকরা তাদের প্রাপ্য অনুযায়ী এ টাকা পেয়েছেন।

শুধু অর্থ মন্ত্রণালয় ভিন্নমত পোষণ করে বলছেন যে তাদের(অর্থ মন্ত্রণালয়) অনুমতি ছাড়াই এ টাকা শিক্ষকদের দেয়া হয়েছে।

কিন্তু দেশে এমন কোন আইন নেই যে এ টাকা দেয়ার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে। যদিও অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন ডকুমেন্টে দেখা যায় যে অর্থ মন্ত্রণালয় এ টাকা দেয়ার বিষয়ে অবগত থাকার পাশাপাশি সম্মতিও দিয়েছেন।

অন্যদিকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় বলেন, এটা আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বিষয়। তাই শিক্ষকরা অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে প্রশাসিনিক ট্রাইব্যুনালে যেতে পারতেন,অনেকে গিয়েছেনও।

কিন্তু যে সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে রিটটি করা হয়েছে সেটি গ্রহণযোগ্য না কারণ এটা রিটের কোন বিষয় নয়।আদালত উভয় পক্ষের শুনানির পর আগামী রোববার রায় দিবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে প্রাথমিক শিক্ষক সমাবেশে দেশের ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত ১ লক্ষ ৪ হাজার ৭৭২ জন শিক্ষকের চাকরি জাতীয়করণের ঘোষণা দেন ।

সে ঘোষণা বাস্তবায়নের জন্য রাষ্ট্রপতির আদেশে পরিপত্র ও গেজেট প্রকাশ করা হয়। সেই পরিপত্র ও গেজেট অনুসারে জাতীয়করণকৃত  শিক্ষকরা সরকারের আর্থিক সুবিধা পেয়ে আসছিলেন।

কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় গত বছরের ১২ আগস্টে ৪৮ হাজার ৭২০ জন শিক্ষককে প্রদানকৃত টাইম স্কেল ফেরত দেয়ার নির্দেশ দিয়ে  একটি পরিপত্র জারি করেন।

গত বছর ৩১ অগাস্ট হাইকোর্টে অর্থমন্ত্রণালয়ের ঐ আদেশটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করা হয়।বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক ও রাজশাহীর গাঙ্গোপাড়া বাগমারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমানসহ কয়েকজন শিক্ষক সেই রিটটি করেন।

হাইকোর্ট তখন ৬মাসের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের আদেশ স্থগিত করে রুল জারি করেন।তখন রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে যান ।

গত বছর ১৩ সেপ্টেম্বর চেম্বার বিচারক সে আবেদনের শুনানি করে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে দেন।রিটকারী পক্ষতখন চেম্বার আদালতের আদেশ বাতিল চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে ।

আপিল বিভাগ গত ১৩ জানুয়ারি সে আবেদনের শুনানি করে রিটটি নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন ও হাইকোর্টের এই বেঞ্চটিও নির্ধারণ করে দেন। আদেশ দেয়ার ৩ সপ্তাহের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে বলা হয়।

তবে আপিল বিভাগ আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের দেয়া স্থগিতাদেশ বিষয়ে কোন হস্তক্ষেপ করেন নি । ফলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছিল, তা স্থগিতই থাকছে।

আরো পড়ুন
মেধাবীদের প্রাথমিক শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্ট করা ও ধরে রাখার ব্যর্থতা লজ্জাজনক
আগামী ১ মার্চ থেকে স্কুল খুলে দেয়া হবে কী না,সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে
প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রকাশ করলেন গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়

Check Also

সম্পত্তি লিখে নিয়ে মাকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দিলেন সন্তানরা

সন্তানদের বিরুদ্ধে সব সম্পত্তি লিখে নিয়ে মাকে মারধরের পর ঘর থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ …

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

স্নাতক ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) । গত বছরের …

আপনার মতামত জানান