জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়া ইসরাইলি নারী গাজার হামাসের প্রশংসায় যা বললেন

ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস দুই মার্কিন নাগরিকের পর এবার দুই ইসরাইলিকে জিম্মিদশা থেকে মুক্তি দিয়েছে ।তারা হলেন– ইসরাইলের নুরিত কুবার (৭৯) এবং ইয়োচেভ লিফশিতজ (৮৫)।কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় অবরুদ্ধ গাজায় সোমবার তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।

আজ মঙ্গলবার ইসরাইলের তেল আবিবে একটি হাসাপাতালে সংবাদ সম্মেলন করেন লিফশিতজ। সেখানে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সঙ্গে  হামাসের হাতে আটক, সেখানে অবস্থান ও মুক্তির বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি।  লিফশিতজ বলেন, ইসরাইলের কিবুৎজ এলাকা থেকে তাকে আটক করেন হামাস সদস্যরা। পরে তাকে মোটরসাইকেলে করে গাজায় নেওয়া হয়। এ সময় তার শরীরে বেশ কয়েক জায়গায় আঘাত লাগে। শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিল তার।

৮৫ বছর বয়সী ওই নারী বলেন, গাজায় নেওয়ার পর তাকে অন্য জিম্মিদের সঙ্গে একটি টানেলের ভেতরে রাখা হয়। সেখানে প্রতি পাঁচজন জিম্মির দেখাশোনার জন্য একজন করে হামাস সৈন্য ছিল। টানেলের ভেতর সাদা পনির ও শসা খেতে দেয়া হয়েছিল।

ইসরাইলি এ বৃদ্ধা জানিয়েছেন, তাদের যে সুড়ঙ্গের ভেতর রাখা হয়েছিল সেটি পরিষ্কার ছিল এবং তিনিসহ অন্য বন্দিরা নরম ম্যাট্রেসের উপর ঘুমিয়েছেন। এছাড়া মোটরসাইকেলে করে যাওয়ার সময় আঘাত পাওয়ায় দুই-তিন দিন পর পর তাকে একজন চিকিৎসক এসে দেখে গেছেন। তাকেও চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল।

লিফশিতজ বলেন, যখন তাকে গাজায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন তার ঘড়ি ও গয়নাগুলো নিয়ে নেন হামাস সদস্যরা। গাজায় মোটরসাইকেল থেকে নামার পর তাকে নিতে আসা লোকজন বলেছিলেন, ‘আমরা পবিত্র কুরআনে বিশ্বাস করি। আমরা আপনাকে আঘাত করব না।

সংবাদ সম্মেলনে লিফশিতজের সঙ্গে ছিলেন তার মেয়ে শ্যারন। মায়ের পক্ষে দোভাষীর কাজ করছিলেন তিনি।লিফশিতজ জানান, প্রতি পাঁচজন জিম্মির জন্য একজন নিরাপত্তারক্ষীর ব্যবস্থা রেখেছে হামাস। জিম্মিদের ‘খুঁটিনাটি বিষয়ে’ খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। নারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে জানাশোনা আছে এমন নারীদেরও সেখানে দায়িত্বে রেখেছে হামাস।

হামাসের মুখপাত্র আবু ওবাইদা এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমরা দুজনকে মুক্তি দিয়েছি। তবে এটা মনে রাখা দরকার যে, গত শুক্রবার তাদের নিতে অস্বীকার করেছিল ইসরাইল। স্বাস্থ্যগত সমস্যা ও মানবিক খাতিরে আমরা এই দুই ইসরাইলিকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের এক মুখপাত্র বিবৃতি দিয়ে জানান, বন্দিদের মুক্ত করতে হামাসের সব ধরনের বাধা কাটিয়ে বিভিন্ন চ্যানেল হয়ে কাজ করছে আইডিএফ (ইসরাইলি সামরিক বাহিনী) ও নিরাপত্তা বাহিনী।

খবরে বলা হয়েছে, এ প্রক্রিয়ায় সহায়তা করেছে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রেডক্রস। সংস্থাটি জানিয়েছে, মুক্তির পর তাদের তেল আবিবে নিয়ে যায় ইসরাইলি বাহিনী। সেখানে চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হয়।এর আগে গত শুক্রবার দুই মার্কিন বন্দিকে মুক্তি দেয় হামাস। এর পর তাদের পক্ষ থেকে প্রস্তাব উঠে যুদ্ধবিরতির। তবে জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করেছে নেতানিয়াহু প্রশাসন।

Check Also

শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা

বিসিএসের প্রিলি–লিখিতসহ গুরুত্বপূর্ণ ৩০টি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে

‘বিসিএস প্রিলি–লিখিতসহ গুরুত্বপূর্ণ ৩০ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস’ শিরোনামে দেশের অন্যতম বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টি ফোর …

বই খুলে দিচ্ছেন এইচএসসি পরীক্ষা,দুই কেন্দ্র সচিবসহ ৫ জন প্রত্যাহার

বই খুলে এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার অভিযোগে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার পালাখাল রোস্তম আলী ডিগ্রি কলেজের দায়িত্বরত …

আপনার মতামত জানান