শুধু অমনোযোগী শিক্ষার্থীরাই নয়, সীমিত আয়ের পরিবারের শিক্ষার্থীরাও শিক্ষা থেকে ঝরে পড়ছেন। করোনার প্রকোপের কারণে মধ্যবিত্তসহ কলকারখানার শ্রমিক, দিনমজুর, কুলি-কামার, রিকশা ও ভ্যানচালকসহ অন্যান্য নিম্ন আয়ের কর্মজীবী মানুষরা দীর্ঘ ৫/৬ মাস কর্মহীন থাকার কারণে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।
করোনা ও উপর্যুপরি বন্যায় মধ্যবিত্তসহ নিম্ন আয়ের মানুষ আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ায় তাদের দু’বেলা দুমুঠো আহার জোগাতেই যেখানে হিমশিম খেতে হচ্ছে সেখানে তাদের সন্তানদের ল্যাপটপ, কম্পিউটার বা স্মার্টফোন কিনে দেয়া তো দূরের কথা।
দৈনিক যুগান্তর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়এ অবস্থায় নিম্ন থেকে মধ্যবিত্ত অনেক অভিভাবকের সন্তানের হাতে ন্যূনতম একটি স্মার্টফোন তুলে দেয়ার সামর্থ্য নেই । ফলে এসব পরিবারের শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাস থেকে ছিটকে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।
আশংকার বিষয় হচ্ছে, বর্তমানে অভাবের সংসারে কিছুটা স্বস্তি জোগানোর জন্য অনেক শিক্ষার্থীই পড়ালেখা ছেড়ে ছোটখাটো কোনো কাজে যোগ দিতে বাধ্য হচ্ছেন। পাশাপাশি বাল্যবিবাহও বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্রামাঞ্চলের অনেক মেয়ে বাল্যবিবাহের শিকার হচ্ছেন।
সরকার এসব সমস্যা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে অর্থনীতিসহ অন্যান্য খাত সচল রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারই ধারাবাহিকতায় পিছিয়ে পড়া শিক্ষাব্যবস্থা সচল করতে এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার প্রতি মনোযোগ বাড়াতে সারা দেশে ৪ অক্টোবর থেকে মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকে অনলাইন ক্লাস নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তবে এ ব্যাপারে অনলাইন ক্লাসে নানাবিধ সমস্যা রয়েছে বলে শিক্ষকরা মন্তব্য করেছেন। যেমন ইন্টারনেটের গতি কম, স্থানীয় বিদ্যুৎ সরবরাহের চরম খারাপ অবস্থা, বিদ্যুৎ চলে গেলে ইন্টারনেট না থাকা। এই অবস্থায় মাত্র ১০%-১৫% বিত্তবান পরিবারের শিক্ষার্থীরা অনলাইন ক্লাসের সুবিধা গ্রহণ করতে পারছেন ।অন্যরা ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
তবে এ কথাও সত্য, মফস্বলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় ইন্টারনেট সুবিধা রয়েছে কিন্তু অনেক শিক্ষকের ইন্টারনেট ব্যবহারে দক্ষতার অভাব রয়েছে । ইন্টারনেট ব্যবহারে দক্ষতা কম থাকায় বাইরের দক্ষ ব্যক্তিদের সাহায্যে অনলাইনে ক্লাস নিতে হচ্ছে শিক্ষকদের।
এ অবস্থায় অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়াতে হলে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষকদের দক্ষ করে তোলার পদক্ষেপ নিতে হবে।