প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১৫তম গ্রেড থেকে ১৩তম গ্রেডে উন্নীত করা হলেও ১১ মাসে মেলেনি বেতন ভাতা। প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে ১১ তম গ্রেডের জন্য আন্দোলন করলেও গত বছরের ৯ফেব্রুয়ারী ১৩তম গ্রেডে উন্নীত করে সরকার।
কিন্তু ১১ মাস কেটে গেলেও এই সুবিধা থেকে এখনো বঞ্চিত প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা।
গত ২৮শে সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপনের আলোকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রধান হিসাব কার্যালয় থেকে হিসাব নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে অফিস আদেশ প্রেরণ করা হয়।
হিসাব নিয়ন্ত্রক কার্যালয় থেকে ২৯শে নভেম্বর অতিরিক্তি হিসাব মহানিয়ন্ত্রক স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ আইবিএসপ্লাসপ্লাস (ইন্ট্রিগ্রেটেড বাজেট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিং সিস্টেম) কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়। নির্দেশনা প্রাপ্তির পরেও ১৩তম গ্রেডে সংযুক্ত করতে পারেননি এখনও তারা ।
এ বিষয়ে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল সহকারী শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মাহবুবর রহমান বলেন, আমরা ১৩ তম গ্রেডে দুটি বোনাস ভাতা পাইনি। ১৩তম গ্রেডের সুবিধা ভোগ করার আগেই অনেক শিক্ষক মৃত্যুবরণ করেছেন।
তিনি সাড়ে ৩ লক্ষ শিক্ষকের আবেগ, অনুভূতি ও গুরুত্ব বিচেনায় তিনি আইবিএসপ্লাসপ্লাস-এ অন্তর্ভুক্ত করণের আকুল আবেদন জানান।
বর্তমানে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা ১৪তম গ্রেডে ১০ হাজার ২শত’ টাকা স্কেলে বেতন পাচ্ছেন। ১৩তম গ্রেড বাস্তবায়ন হলে তারা ১১ হাজার টাকার বেতন স্কেলে উন্নীত হবেন।
এ বিষয়ে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি জনাব সামসুদ্দিন মাসুদ বলেন, আমরা বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করেছি। কাজটা দ্রুতই হয়ে যাবার কথা থাকলেও কোন এক অদৃশ্য কারণে তা বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে।
এই বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বাজেট-১) নাজমা মোবারক বলেন, আমরা অনুমোদন করে দিয়েছি।সহকারী শিক্ষক খুব দ্রুতই ১৩তম গ্রেডের সুবিধাভুক্ত হবেন।
হিসাব মহানিয়ন্ত্রক জহিরুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন , এটি অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন আছে। এটির সুফল খুব শিগগিরই মিলবে।
অর্থ বিভাগের সম্মতিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড-১৪ (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত) এবং বেতন গ্রেড-১৫ (প্রশিক্ষণ বিহীন) থেকে গ্রেড-১৩তে উন্নীত করা হয় বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশ থেকে জানা যায়।
অর্থ বিভাগের সম্মতিপত্রে ৫নং কলামে উল্লেখ রয়েছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ‘২০১৯-এর তফসিল অনুযায়ী পদ পূরণযোগ্য’ এবং ১নং শর্তে বলা হয়েছে ‘৪নং নির্ধারণকৃত বেতন গ্রেড ৫নং কলামে প্রদর্শিত যোগ্যতা/অভিজ্ঞতা অনুযায়ী কার্যকর হবে।
অর্থাৎ যারা ২০১৯ সালের নিয়োগবিধি অনুযায়ী নব নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন তাদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতার এ শর্ত প্রযোজ্য হবে। বাকি শিক্ষকরা অর্থাৎ যারা পূর্ব থেকে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন যাদের অভিজ্ঞতা আছে তারাও বেতন স্কেল উন্নীতকরণের এ সুবিধাপ্রাপ্ত হবেন।
গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়, ২০১৯ সালের নিয়োগবিধি জারি হওয়ার পূর্বের নিয়োগবিধি অনুযায়ী যারা সহকারী শিক্ষক হিসেবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ পেয়েছেন তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্বিশেষে বেতন গ্রেড-১৩ এর সুবিধা পাওয়ার বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
আরো পড়ুন
পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়তে পারে-গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী
২০২১ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের ১ হাজার টাকা করে কিট এলাউন্স দেয়া হবে
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান টিকা নিশ্চিত করার পরে খোলা হোক-অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান
জেনে নিন,সরকার কর্তৃক নির্ধারিত জন্মনিবন্ধন সনদ ফি আসলে কত টাকা?