প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো খুলে দেয়া হবে কি না,সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আগামী রবিবারে হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ । তারই পরিপ্রেক্ষিতে জেলাগুলো থেকে আসা কর্মকর্তাদের মতামতের ভিত্তিতে ২৭ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ আগামী রবিবার মন্ত্রণালয়ে সভা করে স্কুল খোলার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে ।
করোনার কারণে দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেয়ার বিষয়ে মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাদের মতামত নিচ্ছেন ডিপিই। সবার মতামতের উপর ভিত্তি করে প্রাথমিক বিদ্যায়লগুলো ধারাবাহিকভাবে খুলে দেয়ার বিষয়ে আগামী রোববার একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে কিছু সূত্র জানিয়েছেন, সব স্কুল একসাথে না খুলে বরং কয়েকটি ধাপে এবং বিভিন্ন শ্রেণীর ক্লাসও পালাক্রমে নেয়ার নির্দেশনা আসতে পারে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বেশ কিছু স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তামূলক নির্দেশনাও আসতে পারে। ইতিমধ্যে ৫০ দফার নির্দেশনামূলক একটি চিঠিও জেলা শিক্ষা অফিস থেকে বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসে অনুষ্ঠিত মতবিনিময়ে অংশ নিয়ে গুমাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নাজনিন আক্তার বলেন, স্কুল খোলার কমপক্ষে ১৫ দিন আগে শুধু শিক্ষকদের নিয়ে স্কুল পরিচালনায় এক ধরনের রিহার্সালই করতে হবে।
কিভাবে শিশুরা স্কুলে আসবে, অভিভাবকদের দায়িত্ব কী হবে, স্কুলে কিভাবে পাঠদান ও শিশুদের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভাল করার বিষয়ে সামগ্রিক প্রস্তুতি আগে থেকে নিতে হবে। আমরা এমন মতামতই দিয়েছি এখন সরকার যেটি ভালো মনে করবে তার আলোকেই সিদ্ধান্ত আসবে।
তবে বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে জেলা পর্যায়ে ২৫ শতাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেয়ার পক্ষে অনেকে মতামত দিয়েছেন। তারপরে পর্যায়ক্রমে ৫০ শতাংশ, তারপর ৭৫ শতাংশ। শতভাগ করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পরই সব বিদ্যালয় খুলে দেয়ার পক্ষে মতামত দিয়েছেন অনেক কর্মকর্তা।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন এ বিষয়ে বলেন ,শিশুরা এমনিতেই একটু বেশি সংবেদনশীল, তাই তাদের ঝুঁকিও একটু বেশি।তাই করোনার কারণে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই আমাদের অনেক কিছু ভাবতে হচ্ছে। তবে তারপরেও সব দিক বিবেচনা করেই সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো কিভাবে চালু করা যায়, সে বিষয়ে মাঠপর্যায়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের পরামর্শ নেয়া হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ইতোমধ্যে আমরা বেশ কয়েকটি জেলার শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিয়ম করেছি এবং তারা বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব দিয়েছেন। অনেকে জেলা পর্যায়ে ২৫ শতাংশ বিদ্যালয় খুলে দেয়ার প্রস্তাব জানিয়েছেন।
তবে অন্যান্য জেলাগুলোর সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করে তারা যেসব পরামর্শ দেবেন, তার আলোকে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয়ে সভা করা হবে। এরপরেই মূলত আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারবো। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে বিদ্যালয়গুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে শিক্ষকদের নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আরো পড়ুন
প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে বাদ রেখে বাকি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিল পাকিস্তান
ইউএনও অফিসের দারোয়ান-ড্রাইভারও প্রাথমিক শিক্ষকের চেয়ে বেশি বেতন পায়-অধ্যাপক কামরুল হাসান
বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষকরা যেন গরিবের বউ সবার ভাবী