অটোপাশের কারণে ২লক্ষ শিক্ষার্থী স্নাতকে ভর্তি হতে পারবেন না

করোনার কারণে পরীক্ষা ছাড়াই উচ্চমাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ফলে এ বছর এইচএসসিতে ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৫৮৯ পরীক্ষার্থীর সবাই পাস করবে। যদিও দেশের উচ্চশিক্ষায় স্নাতক পর্যায়ে সব মিলিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির আসনসংখ্যা সাড়ে ১১ লাখের কাছাকাছি। সে হিসাবে এইচএসসি পাস করেও এ বছর উচ্চশিক্ষায় ভর্তির সুযোগ পাবে না দুই লাখের বেশি শিক্ষার্থী।

 ইউআরজিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের স্নাতক বা সমমান পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তির আসন রয়েছে ১৫ থেকে ১৮ লাখ। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, বাস্তবে এ সংখ্যা সাড়ে ১১ লাখের বেশি নয়। আর এ বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করবে প্রায় ১৪ লাখ শিক্ষার্থী। এর সঙ্গে যুক্ত হবে গতবার পাস করেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হওয়া শিক্ষার্থীরা।আজকে(১৪ অক্টোবর) দৈনিক বণিকবার্তা পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

শসংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতি বছরই উচ্চশিক্ষায় আসনের একটি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক আসন ফাঁকা থাকে। তবে এ বছর এইচএসসিতে মূল্যায়ন পদ্ধতির পরিবর্তনের কারণে রেজিস্ট্রেশন করা সব শিক্ষার্থীই পাস করায় তাদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ৪৬টি। এর মধ্যে শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকা ৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তির আসন রয়েছে ৬৬ হাজার। আর অনুমোদিত ১০৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৯৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে আসন রয়েছে এক লাখ।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ২ হাজার ২৬৫টি কলেজে স্নাতক ও পাস কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তির আসন রয়েছে ৮ লাখ ৫৮ হাজার ১২৫টি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজে শিক্ষার্থী আসন রয়েছে ২৩ হাজার ৩৩০টি।

মাদ্রাসায় স্নাতক পর্যায়ে আসন ৪০ হাজার, মেডিকেল ও ডেন্টালে সাড়ে ১০ হাজার এবং ইঞ্জিনিয়ারিং, টেক্সটাইল, মেরিন ও অ্যারোনটিক্যাল কলেজ ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোতে ৩০ হাজারের মতো আসন রয়েছে। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে আসন রয়েছে ১ হাজার ৪৩০টি। আন্তর্জাতিক দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে পাঁচশর মতো। সব মিলিয়ে দেশের উচ্চশিক্ষায় স্নাতক পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তির আসন দাঁড়ায় সাড়ে ১১ লাখের কাছাকাছি।

তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, এ বছর বিশেষ পরিস্থিতির কারণে এইচএসসিতে পাসের সংখ্যা বাড়লেও বাড়ানো হবে না উচ্চশিক্ষার আসন। এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বণিক বার্তাকে বলেন, সাধারণত এইচএসসি পাস করা সব শিক্ষার্থীই উচ্চশিক্ষায় ভর্তি হয় না। এছাড়া এমনিতেই প্রতি বছর আসনসংখ্যা অনুপাতে শিক্ষার্থী না পাওয়ায় অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের আসনই ফাঁকা থাকে।

বিশেষ করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজগুলোতে অনেক বেশি আসন শূন্য থাকে। তাই এ বছর আসন বাড়ালে আগামী বছর আরো অনেক বেশি আসনফাঁকা থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে। যারা যোগ্যতার মাধ্যমে সুযোগ পায়, তারাই উচ্চশিক্ষায় ভর্তি হবে। অন্যরা পরে চেষ্টা করবে।

এ বছর থেকে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিল বেশির ভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার ঘোষণা দেয়। সম্প্রতি এইচএসসির মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে সিদ্ধান্ত আসার পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে ১৫ অক্টোবর একটি সভাও অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এ বিষয়ে ইউআরজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিয়ে অনেক আগেই সিদ্ধান্ত হয়েছে। করোনা না এলে এতদিনে তো ভর্তি প্রক্রিয়া অনেক দূর এগিয়ে যেত। এখন এইচএসসি নিয়ে সিদ্ধান্ত আসার পর ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা চলছে। সবার সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।

Check Also

শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা

বিসিএসের প্রিলি–লিখিতসহ গুরুত্বপূর্ণ ৩০টি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে

‘বিসিএস প্রিলি–লিখিতসহ গুরুত্বপূর্ণ ৩০ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস’ শিরোনামে দেশের অন্যতম বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টি ফোর …

বই খুলে দিচ্ছেন এইচএসসি পরীক্ষা,দুই কেন্দ্র সচিবসহ ৫ জন প্রত্যাহার

বই খুলে এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার অভিযোগে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার পালাখাল রোস্তম আলী ডিগ্রি কলেজের দায়িত্বরত …

আপনার মতামত জানান