ভালো জাতি তৈরি করতে সবার আগে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দিকে নজর দিতে হবে-অধ্যাপক নজরুল ইসলাম

বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষকতায় মেধাবীরা কেন আসতে চাচ্ছেন না অথবা আসলেও কেন চলে যেতে চাচ্ছেন,সেই প্রশ্ন সবাই করছেন। কিন্তু  এর সহজ উত্তর বুঝেও সবাই না বোঝার ভান করছেন। আমাদের দেশে শিক্ষকতা পেশাটা মোটেই আকর্ষণীয় নয়।

এমনকি দুঃখজনক হলেও সত্য বাংলাদেশে শিক্ষকদের বেতন দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বনিম্নে। শিক্ষকদের বেতন-ভাতা আগের চেয়ে কিছুটা বাড়লেও মর্যাদায় এখনও যোজন যোজন দূরে বাংলাদেশের শিক্ষকরা ।

এমনকি যে শিক্ষকদের উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশের নীতিনির্ধারকগণ সবচেয়ে গুরুত্ব ও মর্যাদা দেন,আমাদের দেশে সেই প্রাথমিকর শিক্ষকরা এখনো ৩য় শ্রেণির কর্মচারী, যা সারা বিশ্বেই বিরল।

জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এ শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র ও সম্মানজনক বেতন কাঠামো দেয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি । শিক্ষকরাও তাই বাধ্য হয়ে নিজ পেশায় মনোযোগ না দিয়ে অর্থ উপার্জনের জন্য অন্যান্য কাজে ঝুঁকে পড়ছেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ভালো জাতি তৈরি করতে অবশ্যই ভালো শিক্ষক দরকার।আর ভালো জাতি তৈরি করতে হলে সবার আগে আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দিকে নজর দিতে হবে।

প্রাথমিকে মেধাবী শিক্ষক দরকার। তাই মেধাবীদের প্রাথমিকের শিক্ষকতায় আনতে হলে এবং কর্মরত মেধাবীদের ধরে রাখতে হলে ভালো বেতন দিতে হবে।যাতে মেধাবী শিক্ষকরা দুশ্চিন্তামুক্ত হয়ে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারেন।

যোগ্য লোককে(শিক্ষককে) যোগ্য বেতন দিতে হবে।এখনো আমাদের শিক্ষাখাতে বিনিয়োগ কম, এটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা।

দেশে ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক রয়েছেন প্রায় ৪ লক্ষ। তাদের মধ্যে সাড়ে ৩ লক্ষ সহকারী শিক্ষক এখনো ৩য় শ্রেণির কর্মচারী।একজন শিক্ষক কীভাবে ৩য় শ্রেণির কর্মচারী হন?

সম্প্রতি তাদের ১৩তম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে।এই গ্রেডে ১১ হাজার টাকার স্কেলে সহকারী শিক্ষকরা বেতন পাবেন সবমিলিয়ে সাড়ে ১৭ হাজার টাকা।

অন্যদিকে প্রধান শিক্ষকদের  দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করা হলেও এখনো তারা সমপদের বেতন-ভাতা পাননি।তারা ১১তম গ্রেডে ১২ হাজার ৫০০ টাকা মূল বেতনে সবমিলিয়ে বেতন পাবেন প্রায়  ২০ হাজার টাকা।

আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও প্রাথমিকের শিক্ষকদের শুরুতেই বেতন প্রায় ৩০ হাজার টাকা।শ্রীলংকায় প্রাথমিক শিক্ষকরা ১ম শ্রেণির কর্মকর্তার পদমর্যাদা পান অথচ শ্রীলংকার অর্থনীতির চেয়ে আমাদের অর্থনীতি অনেক ভালো ।আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলো শিক্ষাক্ষেত্রে যেখানে এগিয়ে যাচ্ছেন সেখানে আমরা ক্রমেই পিছিয়ে যাচ্ছি।

আরো পড়ুন
ভালো জাতি তৈরি করতে সবার আগে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দিকে নজর দিতে হবে-অধ্যাপক নজরুল ইসলাম
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে সকল ধরণের কোটা বাতিল চেয়ে সরকারকে উকিল নোটিশ
২০২১ সাল থেকেই প্রাইমারী,হাইস্কুল ও কলেজের সাপ্তাহিক ছুটি ২দিন চুড়ান্ত হচ্ছে

Check Also

প্রাথমিক শিক্ষক

সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড দিয়ে পিএসসির মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হোক

দেশের নীতিনির্ধারকগণ বলেন প্রাথমিক শিক্ষা হচ্ছেন শিক্ষার ভিত্তি, ভিত্তি মজবুত না হলে শিক্ষার উন্নয়ন কখনোই …

প্রাথমিক শিক্ষক

১০ম গ্রেড দিয়ে সহকারী শিক্ষকদের আর্থ-সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি করা হোক

প্রাথমিক শিক্ষকরা অবুঝ শিশুদের শিক্ষা দেয়ার মত সবচেয়ে কঠিন ও গুরুদায়িত্ব পালন পালন করেন।পরিশ্রমের দিক …

আপনার মতামত জানান