ডিপ্লোমাধারি প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য,দেখার কেউ নেই

অন্য সকল বিভাগের ডিপ্লোমাধারি পেশাজীবীরা বর্তমানে যেখানে ১০ম অথবা ১১তম  গ্রেডে বেতন পাছেন,সেখানে ডিপ্লোমাধারি প্রাথমিক শিক্ষকরা ১০ম অথবা ১১তম গ্রেড পাওয়াতো দুরের কথা, বরং তাদের মুল বেতন আরো কমে যায়।মানুষ গড়ার আসল কারিগর প্রাথমিক শিক্ষকদের সাথে এর চেয়ে বড় তামাশা আর কি হতে পারে?

১৩তম গ্রেডের গ্রেডের গেজেট জারি করার পূর্বে প্রাথমিক শিক্ষকদের ২টি গ্রেড ছিল।একটি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গ্রেড(১৪তম),অন্যটি হচ্ছে প্রশিক্ষণবিহীন গ্রেড(১৫তম)।দীর্ঘ দেড় বছর ডিপ্লোমা করার পরে প্রশিক্ষণবিহীন প্রাথমিক শিক্ষকরা যখন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গ্রেডে আপগ্রেড করতে যায় তখন তাদের মূল বেতন বৃদ্ধি না পেয়ে বরং আরো কমে যায়।

আরো পড়ুন

১৩ তম গ্রেডে সহকারী শিক্ষকরা বকেয়া বেতন পাবেন কি?

অনুমতিবিহীন উচ্চতর ডিগ্রী সম্পন্নকারী শিক্ষকদের সনদ সার্ভিসবুকে এড করা সম্ভব হবে কি?

যেভাবে ধাপে ধাপে Power Point দিয়ে ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করবেন

উদাহরণস্বরূপ জনাব মিজানুর রহমান ও শাহীনুর রহমান দুজনেই ১৮ জানুয়ারী ২০১৬ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে একই সাথে প্রশিক্ষণবিহীন গ্রেডে (১৫তম) যোগদান করেছেন। মিজানুর রহমান ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন কিন্তু শাহীন রহমান ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেননি। ২০১৮ সালে মিজানুর রহমান যখন ডিপ্লোমা সম্পন্ন করে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গ্রেডে আপগ্রেড হন তখন তার মূলবেতন বৃদ্ধি না পেয়ে আরো কমে যায়।২০১৯ সালে প্রশিক্ষণবিহীন স্কেলে(১৫তম গ্রেডে) শাহীনুর রহমানের যেখানে মূল বেতন ১১২৪০টাকা সেখানে মিজানুর রহমান প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গ্রেড ও একইসাথে যোগদান করেও তার মূল বেতন ১১২৪০ থেকে কমে ১০৭১০ টাকা হয়।অর্থাৎ জনাব মিজানুর রহমান জনাব শাহীনুর রহমানের চেয়ে প্রতিমাসে শুধু মূল বেতনই ৫৩০ টাকা কম পাচ্ছেন।

গত ৯ফেব্রুয়ারী ২০২০ তারিখে সরকার প্রশিক্ষণবিহীন গ্রেড তুলে দিয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণবিহীন উভয় শিক্ষকদের জন্য একই গ্রেড নির্ধারণ করেন।এখন ৯ফেব্রুয়ারী ২০২০তারিখে থেকে জনাব মিজানুর রহমান ও জনাব শাহীনুর রহমান উভয়ে ১৩তম গ্রেডে ফিক্সেসন করলে প্রশিক্ষণবিহীন শাহীনুর রহমানের মূল বেতন হবে ১১৫৫০টাকা সেখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মিজানুর রহমানের মূল বেতন হবে ১১০০০টাকা। ২০২০সালের বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট পেয়ে বর্তমানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মিজানুর রহমানের মূল বেতন হবে ১১৫৫০ টাকা কিন্তু প্রশিক্ষণবিহীন শাহীনুর রহমানের মূল বেতন হবে ১২১৩০ টাকা।চাকরির শেষদিন পর্যন্ত মিজানুর রহমান পূর্বে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করার কারণে এবং একই সাথে যোগদান করেও এভাবে শাহীনুর রহমানের চেয়ে বেতন কম পেতেই থাকবেন।

সরকারী হাইস্কুলের শিক্ষকদের বিএড সম্পন্ন করার পরে দুটি বিশেষ ইনক্রিমেন্ট প্রদান করা হয়।অন্যদিকে দেশের অন্য বিভাগের এসএসসি/এইচএসসির পরে ডিপ্লোমাধারী পেশাজীবীরা ১০ম অথবা ১১তম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন সেখানে স্নাতক+ডিপ্লোমাধারী মানুষ গড়ার কারিগর প্রাথমিক শিক্ষকদের সাথে এ ধরণের প্রহসন খুবই দুঃখজনক।এখন যেহেতু প্রশিক্ষণবিহীন কোন গ্রেড নেই তাই সকল ডিপ্লোমাধারী প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ২টি বিশেষ ইনক্রিমেন্ট দেয়া হোক।
শিক্ষকদের ঠকালে শিক্ষকরা একাই ঠকেনা বরং পুরো দেশ ও জাতি ঠকে।যাদের হাতে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার ক্ষমতা রয়েছে তাদের সাথে সকল ধরণের প্রহসন বন্ধ করা হোক।

Check Also

স্কুল টিচার

উন্নত দেশসমূহে প্রাথমিক শিক্ষকদের মর্যাদা কেমন,নিয়োগ দেওয়া হয় কিভাবে?

প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বছরে প্রায় ৩৮ লক্ষ টাকা। এমন চাকরি কে না চায়। তবে চাকরিটা …

বাংলাদেশ ব্যাংক

আগামী রবিবার (১ আগস্ট) ও বুধবার (৪ আগস্ট) ব্যাংক বন্ধ থাকবে

বাংলাদেশ ব্যাংক করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আগামী রবিবার (১ আগস্ট) ও বুধবার (৪ আগস্ট) …

আপনার মতামত জানান